জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর দারুল উলুম আলিম মাদ্রাসার ৪ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ প্রায় ৫ বছরেও শেষ হয়নি । সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভবনের ৩য় তলায় ছাঁদ শেষ করে ৪র্থ তলার ছাঁদের জন্য সেন্টাটিং প্রস্তুত করা হয়েছে। আর এ ভাবেই চলে গেছে ৩ বছর। উপর থেকে বাঁশ কাঠ নষ্ট হয়ে নিচে পরছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। চরম ঝুঁকিতে আছে শিক্ষক কর্মচারীসহ ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর জীবন। খোজ নিয়ে জানা গত ১৫-০৯-২০১৯ তারিখের টেন্ডারে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বেসরকারি মাদ্রাসা সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও সহযোগী শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর ঝিনাইদহের বাস্তবায়নে ২ কোটি ৯৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯৬১ টাকা ব্যায়ে ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মানের কাজটি পান মোঃ আনিচুর রহমান, জুগিয়া, কুষ্টিয়া। তিনি কাজ বিক্রি করেন ঝিনাইদহের টিকাদার শাহীনের কাছে, তিনি কাজ শুরু করেন ২৩-০২-২০২০ তারিখে যা ১৮ মাসে কাজ সমাপ্ত করে কর্তৃপক্ষের নিকট ভবন বুঝে দেয়ার কথা থাকলেও তা আজও শেষ করা হয়নি। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কাজ সময়মত শেষ না করার জন্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে বার বার ধরণা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন ভবনে চলছে পাঠদান। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। প্রত্যন্ত এ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার একমাত্র মাধ্যম সাফদারপুর দারুল উলুম আলিম মাদ্রাসার চার তলা ভবন নির্মাণকে ঘিরে ১৫টি গ্রামের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এক নতুন দিগন্তের স্বপ্ন দেখছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানায়, শ্রেণিকক্ষ সংকট নিয়ে ছোট ছোট, ভাঙ্গাচুরা অনুপযোগী ঝুকিপূর্ণ রুমে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হচ্ছে তাদের। তাদের দাবি, এসব রুমে ক্লাস করতে ইচ্ছা করে না। ছাদের সিমেন্ট বালু খসে পড়ছে প্রতিনিয়তই। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। নতুন ভবনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হোক। আমাদের স্কুলের অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ছিল নতুন ভবনে ক্লাস করা হবে। কিন্তু এখনও ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। দ্রুত সময়ে মধ্যে ভবণের কাজ শেষ করার জন্য কর্তৃপক্ষ নিকট জোর দাবি জানাছি। এ বিষয়ে মাদ্রাসা অধ্যাক্ষ মাওলানা জাকির হোসেন বলেন, অনেক কষ্ট করে আমরা একটি ভবন পেয়েছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছর ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। কেন বন্ধ রাখা হয়েছে তা আমরা জানি না। অবকাঠামো সংকট নিয়ে অনেক কষ্টে পাঠদান চালাচ্ছি। গত চার বছরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত করেছে। বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভবণের কাজটি সম্পন্ন করার জন্য কর্তৃক পক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সাফদারপুর দারুল উলুম আলিম মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ ওয়াহেদ আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছি। নির্মাণ সামগ্রী যত্রতত্র ফেলে রেখে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়নে ধারাবাহিকতা বিনষ্ট করছে। অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে ভবনের নির্মাণ কাজটি সমাপ্ত করে মাদ্রাসার লেখাপড়া পরিবেশ উন্নয়নে সহযোগিতার জন্যে কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি করে বলেন আমাদের মাদ্রাসায় অসমাপ্ত কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা হোক। অবকাঠামো সংকট থাকায় বহুবার আবেদন করে একটি ভবন পেয়েছিলাম। একই সাথে শুরু হওয়া ২৪ টি ভবনের মধ্যে ২৩ টি ভবন বহু আগেই হস্তান্তর করা হলেও আমাদের ভবনটির কাজ শেষ করা হয়নি। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এর কর্তৃপক্ষ সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, আপনারা ঢাকা আমাদের অফিসে আসেন। এ বিষয়ে আলাপ হবে বলে ফোনটি রেখে দেয়। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি তিনি জানান, আমরা চেষ্টা করেছি কাজটি সমাপ্ত করার জন্য কিন্তু ঠিকাদারের অনিহা থাকায় কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা চেষ্টা করছি টেন্ডারটি বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার করিয়ে সাফদারপুর দারুল উলুম আলিম মাদ্রাসা ভবনের কাজটি সম্পন্ন করার জন্য।