ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় কাঠিপাড়া, দিয়াকুল, কিস্তাকাঠি ও দেউরি গ্রাম ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে ড্রেজার ও শ্রমিক আটক, জেল-জরিমানা করা হলেও ঠেকানো যাচ্ছে না নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন। হুমকির মুখে ষাইটপাকিয়া ফেরীঘাট, কিস্তাকাঠি সাইক্লোন শেল্টার, শত শত বসতবাড়ি ও আবাদি জমি এবং দিয়াকুল খেয়াঘাট পারাপারের বিশাল সেতু। ইতোমধ্যে নদীতে ভেঙে গেছে কিস্তাকাঠি মসজিদ ও খেয়াঘাট, দিয়াকুলের মসজিদ, মাদ্রাসা ও খেয়াঘাট। ঝালকাঠিকে বালুমহল ঘোষণা করা না হলেও একটি সিন্ডিকেট ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ বাণিজ্য করে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গেছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর ভূমিকা নেওয়ায় দিনের বেলায় বন্ধ রেখে এখন বালু উঠানো হচ্ছে রাতে। অন্ধকার নেমে এলেই এসব গ্রামের নদীভাঙন এলাকায় শুরু হয় অবৈধ ড্রেজারে বালু উত্তোলনের প্রতিযোগিতা। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপেও বন্ধ না করায় অবৈধ বালু উত্তোলন রোধে প্রধানমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রী, পানিসম্পদ মন্ত্রী ও সচিবসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
গত ২ মার্চ সুগন্ধা নদী-সংলগ্ন এসব গ্রামে গেলে গ্রামবাসী জানান, আতঙ্কে রাতে ঘুমাতে পারছে না তারা। বছরে পর বছর অবৈধ বালু উত্তোলন করায় প্রতিদিন ভেঙে যাচ্ছে আবাদি জমি ও বসতবাড়ি। একই সঙ্গে হুমকির মুখে আরও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিস্তাকাঠি গ্রামের কৃষক আসলাম হাওলাদার, নদীতে ভেঙে যাওয়া মসজিদের ইমাম রবিউল ইসলামসহ গ্রামবাসী জানান, ড্রেজারের মেশিনে বালু টান দেওয়ায় এসব গ্রামের নদীপাড়ের মাটি নেমে যায়। রাত নামলেই ৩০ থেকে ৪০টি ড্রেজার লাইন দিয়ে বালু উত্তোলন করে ভোর পর্যন্ত। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে দিয়াকুল ট্রলারঘাটে গিয়ে দেখা যায়, রাতে অবৈধ বালুভর্তি একটি ট্রলার থেকে সেতুর সঙ্গে পাইপ লাগিয়ে বালু সরবরাহ করা হচ্ছে।