হাকিকুল ইসলাম খোকন,যুক্তরাষ্ট্র সিনিয়র প্রতিনিধি: আন্তর্জাতিক ফ্যামিলি রেমিট্যান্স দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে ‘রেমিট্যান্স এবং উন্নয়ন’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো: সহিদুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশের রেমিট্যান্স এজেন্সির প্রতিনিধিসহ নিউইয়র্কে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ এবং রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক, সংস্কৃতি ও মিডিয়া অঙ্গণের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।খবর বাপসনিউজ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মো: সহিদুল ইসলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা বিশদভাবে উল্লেখ করেন। ২৫ জুন ২০২২ পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক নতুন গতি সঞ্চার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী বান্ধব নীতি ও পদক্ষেপের বর্ণনা করে তিনি প্রবাসীদেরকে বৈধ পথে আরও রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা ও সুবিধা সমূহ আগামীতে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে যেখানে অধিক সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছে সেখানে ব্যাপক প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরির উপর জোর গুরুত্বারোপ করেন। রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর অবদানের কথা উল্লেখ করে তাদের সহযোগিতা ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহবান জানান। বাংলাদেশ – যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পিপল টু পিপল রিলেশনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসাবে অভিহিত করে, দু’দেশের মধ্যকার সহযোগিতাকে আরো গভীর ও শক্তিশালী করণে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউয়র্কস্থ সোনালী এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট ও সিইও দেবশ্রী মিত্র। তিনি তার উপস্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের হাল-নাগাদ চিত্র তুলে ধরেন এবং এ প্রবাহ বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের প্রদত্ত নানাবিধ সুযোগ-সুবিধার বর্ণনা করেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো বৈধভাবে অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রণোদন শতকরা ২ থেকে ২.৫ ভাগে উন্নীতকরণ। উম্মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত প্রবাসী গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ রেমিট্যান্স প্রবাহ সহজীকরণ ও ত্বরান্বিত করার বিষয়ে তাদের স্ব স্ব মতামত ও চিন্তা ভাবনা তুলে ধরেন। বক্তারা সরকার ঘোষিত প্রণোদনাসমূহ কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করে প্রচার-প্রচারণা চালানো, রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে প্রণোদনার হার বৃদ্ধি করা, রেমিট্যান্স সপ্তাহ বা মেলার আয়োজন করা, ওয়েজ আর্নার বন্ডের সুবিধাসমূহ যাতে প্রবাসীরা সহজে পেতে পারে সে ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশের অর্থনেতিক উন্নতিতে প্রবাসীদের ভূমিকা, বিশেষ করে এ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় রেমিট্যান্সের অপরিসীম অবদানের কথা দৃঢ়তার সাথে ব্যক্ত করেন। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় -একদিকে করোনা মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব ও অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি- রেমিট্যান্সের প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তা পূর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশী বলে কনসাল জেনারেল যোগ করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ রূপকল্প এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে তিনি প্রবাসীদেরকে আরো কার্যকরী ভূমিকা রাখার উদাত্ত আহবান জানান। আন্তর্জাতিক ফ্যামিলি রেমিট্যান্স দিবসটি এমন এক সময় উদযাপিত হচ্ছে যখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কূটনৈতিক সপ্তাহ পালন করছে, যা আজকের অনুষ্ঠানের এক নতুন গুরুত্ব ও মাত্রা যোগ করেছে বলে কনসাল জেনারেল মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ কনস্যুলেটের এ আয়োজনকে ব্যতিক্রমধর্মী ও সময়োপযোগী বলে এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন।