রাফি চৌধুরী, সীতাকুণ্ড প্রতিনিধিঃ চট্রগ্রামের সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি বিএম ডিপােতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার দীর্ঘ দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও দূর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধে নিহত অনেক পরিবারই ক্ষতিপূরণ, এমনকি লাশ দাফনের খরচও পায়নি। এর মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষায় শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারও আছে। সনাক্ত ছাড়া পাশাপাশি ডিএনএ সনাক্ত হওয়া তাদের মরদেহ দাফন করা হলেও খবর নেয়নি বিএম ডিপাে কর্তৃপক্ষ। তাদের পেছনে ঘুরে ঘুরে পাত্তা না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছে নিহতের পরিবার গুলো। গত ৪ জুন ঘটনার পর পর বিএম কনটেইনার ডিপােতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের পর ৫১ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হয়। প্রথম দফায় অজ্ঞাত ২৪ লাশের মধ্যে আটজনের মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য লাশগুলােও দ্রুতই হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে। শনাক্ত হওয়া লাশের মধ্যে একজন সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ফকিরহাট ফকিরপাড়া এলাকার আবুল মনির। তার পিতা আব্দুল হান্নান ও স্ত্রী’র হাতে লাশ হস্তান্তর করা হয়। নিহত মনির বিএম ডিপোতে ক্রেন অপারেটরে কাজ করতেন। বিস্ফোরণের পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ডিএনএ পরিক্ষার রিপোর্ট আসার পর গত শুক্রবার বিকালে তার তার লাশ (কংকাল) হস্তান্তর করা হলে রাতেই তার লাশ দাফন করা হয়েছে। তার পিতা মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান (প্রকাশ – শাহজাহান) প্রতিবেদককে বলেন, ডিপাে কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়া তাে দূরের কথা, লাশ দাফনের খরচ পর্যন্ত দেয়নি। মালিকপক্ষের সঙ্গে যােগাযােগ করলে পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছিল। ডিএনএ পরীক্ষায় পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর তারা খবরও নিচ্ছে না। একই অভিযােগ ডিএনএ পরীক্ষায় শনাক্ত অন্য সাতজনের পরিবারেরও। তাদেরও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের কাগজপত্র জমা নেওয়ার কাজে নিয়ােজিত বিএম ডিপোর কর্মকর্তা তায়েব হিরাে জানান, মৃত্যু সনদ ও ডিএনএ পরীক্ষার সনদ জমা দিলে ক্ষতিপূরণ প্রদানে সহযােগিতা করা হবে। তবে সময় দিতে হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন প্রতিবেদক কে জানান, বিএম ডিপােতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে হতাহত সবার পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে। প্রথম পর্যায়ে যেসব মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেছে, তাদের স্বজনরা ক্ষতিপুরণ পেয়েছেন। যাদের নাম-পরিচয়ের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে, প্রতিবেদন পেলে তাদের পরিবারকেও সহায়তা দেওয়া হবে। সদ্য ডিএনএ শনাক্ত আটজনের তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও ডিপাে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানাে হয়েছে। উল্লেখ্য,গত ৪ জুন উপজেলার সােনাইছড়িতে অবস্থিত বিএম কনটেইনার ডিপােতে আগুন লাগে। আগুন লাগার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ভয়ংকর এক বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ডিপোটির বিভিন্ন জায়গায়।এতে এখন পর্যন্ত ১০ ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ৫১ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। অজ্ঞাত আরও ১৬ মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষা প্রক্রিয়াধীন।আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ।শিল্পাঞ্চল সীতাকুন্ড এতোবড় দূর্ঘটনা এটাই প্রথম।