বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়লো দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের অভিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। গতকাল শনিবার রাতে বিদ্যালয় অফিস কক্ষে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে পুড়ে গেছে অফিস কক্ষের দাপ্তরিক সব নথিপত্র, আসবাবপত্র, শেখ রাসেল কর্নার এবং সব শিক্ষা উপকরণ। পুড়ে গেছে অফিস কক্ষ সংলগ্ন প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষের মাদুরসহ সব শিক্ষা উপকরণ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা থেকে শিশুদের জন্য বিনামূল্যের পাঠ্যবই তুলে নিয়ে বিদ্যালয়ের পাশের একটি বাড়িতে রেখে দিই। সকালে গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম আমাকে সংবাদ দেন যে, আমার বিদ্যালয় আগুনে পুড়ে গেছে। আমি এসে গিয়ে অফিস কক্ষ এবং প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষের সব কাগজপত্র ও শিক্ষা উপকরণ পুড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, রাতের অন্ধকারে কে বা কারা আগুন দিয়েছে জানি না। তবে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে এ বিদ্যালয় নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। বিদ্যালয় নিয়ে আদালতে মামলা পর্যন্ত হয়েছে। অভিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা চন্দর মুর্মু বলেন, বাড়ির কাছে একটাই স্কুল আছে। আমার মেয়ে ওই স্কুলের যায়। সকালে স্কুলে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি এসেছে বলছে স্কুলে আগুন দিয়ে সব পুড়িয়ে দিছে কেউ। মেয়ের কথা শুনে স্কুলে গিয়ে দেখি বেঞ্চসহ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। স্থানীয় ব্যক্তি জহুরুল ইসলাম বলেন, সকালে বাড়ির থেকে বের হয়ে হাটতে গিয়ে কাঠ পোড়া গন্ধ পাই। এগিয়ে গিয়ে দেখি বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। রাতের বেলা প্রচণ্ড কুয়াশা থাকায় এবং বিদ্যালয়টি লোকালয় থেকে একটু আড়ালে হওয়ায় সবার দৃষ্টির আড়ালে ছিল। তবে যেই এটা করুক কাজটি ভালো করেনাই। প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আলেয়া বেগম বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে বিদ্যালয়ে আসার সময় শুনি আমাদের বিদ্যালয়টি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা ভয় পেয়ে কান্না করছিলাম। পরে বড় স্যার এসে আমাদের বই দিয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াকিল ওই বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। পরে, শিক্ষকদের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির ৫২ জন শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষের বই তুলে দেন। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষককে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার নির্দেশ দেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত বলেন, অভিরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় রোববার বিকেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন, সকালে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি আমাকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন। আমি তাকে থানায় লিখিত অভিযোগ করতে বলেছি। আর ওসিকে বলেছি অভিযোগটি মামলা হিসেবে আমলে নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নিতে।